জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পর আগষ্টের শেষ সপ্তাহে নাটোরের গুরুদাসপুরের হাট বাজারে কমেছে সবধরনের সবজি ডিম ও মুরগীর দাম। দাম নিয়ন্ত্রণে আসায় স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ ক্রেতাদের মাঝে।
শনিবার (২৭ আগস্ট) সকাল ১১ টার দিকে সরোজমিনে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা তথা চলনবিলাঞ্চলের অন্যতম প্রধান বাজার চাঁচকৈড় হাটঘুরে ক্রেতা বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে দামের স্বস্তির কথা জানা গেছে। এখানে প্রতিদিন বাজার বসলেও সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার হাট বসে।
কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে,সব থেকে বেশি কমেছে কাঁচা মরিচের দাম। ১২০ টাকার কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে অর্ধেকেরও কম অর্থাৎ ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে। প্রতি কেজি আলু ৩০ টাকা থেকে ৩ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ২৭ টাকা কেজিতে। পটল ও পেঁপে কেজিতে ২০ টাকা কমে ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি ধুন্দল ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়।
গুরুদাসপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুলতান আরেফিন ও আনন্দ নগর মহল্লার সবজি ক্রেতা আবু সাইদ জানান,নিত্যপন্যের দাম বাড়লেও তাদের আয় বাড়েনি। সবজি বাজারের উত্তাপ অনেক কমেছে। সবধরনের সবজি প্রায় অর্ধেক দমে বিক্রি হচ্ছে। তবে আরও দাম কমলে সর্বসাধারণের নাগালে আসবে। ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে বাজার মনিটরিংয়ের দাবি করেন তারা।
চাঁচকৈড় বাজারের সবজি বিক্রেতা টুটুল প্রামানিক বলেন,সপ্তাহের ব্যবধানে সবধরনের সবজি কেজিতে ১০ থেকে ৩০ টাকা কমেছে। সব থেকে বেশি কমেছে বেগুনের দাম ১০ দিন আগে যে বেগুন বিক্রি হচ্ছিলো ৭০ টাকা কেজি সেটি এখন কেজিতে ৪০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। চিচিঙ্গা ও ঢেঁড়স ১০ টাকা কমে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কচুর লতি কেজিতে ৩০ টাকা কমে ৩০ টাকা,করলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। এটিও ক’দিন আগে বিক্রি হচ্ছিল ৬০ টাকা কেজি।
তিনি আরও জানান,৮০ টাকার শশা ২০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজিতে। ৫০ টাকায় চাল কুমড়া,লাউ আকারভেদে ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি হালি লেবু দাম কমে ৫ থেকে ১০ টাকায় এবং ১ হালি(৪টি)কাঁচকলা ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়। দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা,রসুন ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আদা ৯০ টাকা থেকে ১০ টাকা কমে ৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
মুরগী ব্যবসায়ী দুলাল ফকির জানান,প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫ টাকা কমে ১৬০ টাকা,সোনালি ও লেয়ার মুরগি ২৮০ টাকা থেকে ২০ টাকা কমে ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে দেশী মুরগীর দাম অপরিবর্তিত অর্থাৎ ৪০০টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে ৫০ টাকা বেড়ে গরুর মাংশ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা কেজি। প্রতি ডজন ব্রয়লার মুরগির ডিম ১৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, হাঁসের ডিম ১৮০ টাকারস্থলে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বেগুন বিক্রেতা কৃষক দেলবর হোসেন,করলা বিক্রেতা রমিজ উদ্দিন জানান, সার,তেলের দাম বাড়ায় তাদের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। সবজির দাম কমলেও বর্তমান বাজার দরেও খুশি তারা,এ দামেও লাভবান হচ্ছেন। তবে আগামীতে দাম আরও কমলে লোকসান গুনতে হবে তাদের।
গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশীদ জানান,গুরুদাসপুরে দৈনিক যে পরিমান সবজি উৎপাদিত হয় সেটা চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট। বাজার কমলেও যে দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে তাতেও কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ৪:৪৮ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৮ আগস্ট ২০২২
gurudaspurbarta.com | MD. Faruk Hossain