সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে নাটোরের গুরুদাসপুর পৌরসদরের চাঁচকৈড় নাজিম উদ্দিন স্কুল এ্যান্ড কলেজের নির্মাণাধীন মার্কেট ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে। প্রকাশ্য দিবালোকে এঘটনায় এলাকায় ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
ফেসবুক লাইভের ভিডিওতে দেখা গেছে, ২৪ আগস্ট সকালে একদল যুবক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে নির্মানাধীন মার্কেটের ইটের গাঁথুনি ভাঙ্গছে। এসময় মাঠের পাশে আসন পেতে বসে থাকতে দেখা যায় উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিয়ার রহমান বাঁধন,ফজলুর রহমান মধু সরকারসহ বেশ ক’জনকে। ভাঙ্গার সময় তাদের বলতে শোনা যায়-সব প্রক্রিয়া শেষ করে তারা মাঠ রক্ষার কাজ করছেন। তাদের বাঁধা দেওয়ার কেউ নেই। এছাড়া স্থানীয় খেলোয়ার শিপনের নেতৃত্বে শুরুর প্রায় ৩ ঘন্টার মধ্যে নির্মাণাধীন ওই মার্কেটের ওয়াল ভেঙ্গে ফেলে দুবৃত্ত্বরা।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, মাঠের উত্তরপাশের পাকা সড়ক সংলগ্ন প্রায় ১৫ ফিট প্রস্থ ও ৬৫ ফিট দৈর্ঘ্যের টিনশেড মার্কেটটি অস্থায়ীভাবে নির্মাণ করা হচ্ছিল। প্রায় ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ধারী পর্যন্ত গাঁথুনি শেষ করেছিলেন তারা। অথচ একদল দুবৃত্ত্ব জোরপূর্বক তা ভেঙ্গে ফেলেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে- মাঠের উত্তরপাশের সীমানা থেকে শুরু করে মাঠের কয়েক ফিট ভিতর পর্যন্ত ওই মার্কেট নির্মাণের কাজ চলছিল। এখন আর মার্কেটের ওয়াল নেই। ভাঙ্গা ইটের স্তুপ পড়ে রয়েছে।
বিদ্যালয় সূত্র বলছে- ১৯৪১ সালে স্থাপিত প্রাচীন এই বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থী সংখ্যা ১ হাজারের ওপরে। শিক্ষার্থীদের বিনা বেতনে লেখা-পড়া,নিজস্ব অর্থায়নে শিক্ষাবৃত্তি,শিক্ষকদের ইনসেভটি প্রদানের লক্ষ্যে একটি উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তারই ধারাবাহিকতায় মাঠের আদর্শ আয়তন ঠিক রেখে (৬৫ ফিট প্রস্থ ও ১৩০ ফিট ) মাঠটির উত্তরপাশে আধাপাকা টিনশেড মার্কেট নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল।
নাজিম উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মো. জালাল উদ্দিন জানান, মূলত পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্তে প্রতিষ্ঠানের আয় বাড়াতে মার্কেট নির্মাণ করছিলেন তারা। এতে খেলার মাঠের কোনো সমস্যা ছিলনা। বরং পুরনো ভবন অপসারণ করায় দক্ষিণপাশের একাডেমিক ভবনের সামনে মাঠের দৈর্ঘ্য আরো বেড়েছে।
তিনি আরও জানলেন, ২৩ আগস্ট পরিচালনা কমিটির বৈঠকে মার্কেট নির্মাণের বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের সাথে সভা করার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই একদল যুবক মাঠ নষ্টের মিথ্যা অভিযোগ তুলে জোরপূর্বক নির্মাণাধীণ মার্কেটের ওয়াল ভেঙ্গে দিয়েছে। এসময় ওই যুবকেরা অশালীন ভাষায় গালমন্দও করেন।
পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন,কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা না করে মাঠ সংকোচনের মিথ্যা অভিযোগে প্রতিষ্ঠানের নির্মাণাধীন মার্কেটের ওয়াল ভাংচুরের বিষয়টি দুঃখজনক। প্রতিষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু আন্ত:শ্রেনী ফুটবল প্রতিযোগীতার আয়োজন করতে অপসারিত গোলপোষ্ট স্থাপন,মাঠ সংস্কার কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এঘটনায় থানায় অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে।
অভিযুক্তদের মধ্যে শিপন বলেন-মার্কেট নির্মাণ করতে গিয়ে কর্তৃপক্ষ মাঠের উত্তরপাশের গোলপোষ্টটি ভেঙ্গে ফেলেছে। এতে করে মাঠে খেলা-ধুলা করতে পারছেনা কেউ। তাই তারা নিজেরাই ওয়াল ভেঙ্গে ফেলেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ৫:৪৩ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৭ আগস্ট ২০২৩
gurudaspurbarta.com | MD. Faruk Hossain