সোমবার ১৪ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ৩০শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

গুরুদাসপুরে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী তিন বন্ধু সংবর্ধিত

অধ্যাপক সাজেদুর রহমান সাজ্জাদ

১৫ আগস্ট ২০২২ ৮:৩৬ অপরাহ্ণ

গুরুদাসপুরে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী তিন বন্ধু সংবর্ধিত

সময়টা ছিলো ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর এলাকার মানুষ যখন ভয়ে চুপ তখন প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমে পড়েছিলেন কলেজ পড়–য়া তিন বন্ধু। তারা মিছিল করেন,দেয়ালে দেয়ালে হত্যার বিচার চেয়ে পোস্টার লাগান। প্রতিবাদের কারনে পুলিশের নির্মম নির্যাতন ও ২৯ মাস কারা ভোগ করতে হয় তাদের। সেই সময়ের প্রতিবাদী তরুণ তিনবন্ধু নির্মল কর্মকার,অশোক পাল ও প্রবীর বর্মনকে সম্মাননা জানালো চলনবিল প্রেসক্লাব।
সোমবার (১৫ আগস্ট) সকাল ১১টায় চলনবিল প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধুর শাহাদৎ বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা শেষে ওই তিনবন্ধুর হাতে সম্মাননা স্বারক তুলে দেয়া হয়।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চলনবিল প্রেসক্লাবের সভাপতি এম এম আলী আক্কাছ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পৌর মেয়র মো. শাহনেওয়াজ আলী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন,সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সরকার এমদাদুল হক মোহাম্মাদ আলী,আলহাজ আব্দুল বারী,মো. আব্দুল কাদের,আহম্মদ আলী মোল্লা ও প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক।
মুজিব প্রেমি ওই তিনবন্ধুর দুঃখভরা জীবনের স্মৃতি চারন করে বক্তারা বলেন, ২৯ মাস কারাভোগের কারনে তাদের সুন্দর সোনালী ভবিষ্যত নষ্ট হয়ে গেছে। ভয়ভীতির তোয়াক্কা না করে উত্তরবঙ্গের মধ্যে তারাই প্রথম বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার চেয়ে মিছিল,পোষ্টারিং ও লিফলেট বিতরণ করেছিলেন। একারনে তিনবন্ধু ২বছর ৫মাস সশ্রম কারাভোগ করতে হয়েছে তাদের। তাদের শারীরিক,পারিবারিক অবস্থা ও মানবিক মূল্যায়নে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া উচিৎ। তাদের সন্তানদের যোগ্যতানুযায়ী সরকারী চাকরি দেওয়ার দাবী করেন তারা।
উল্লেখ্য-১৯৭৫ সালে তিন বন্ধুই স্থানীয় বিলচলন শহীদ সামসুজ্জোহা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। ১৫ আগস্ট বেতারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের বিচার দাবি করে তিন বন্ধু দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার লাগিয়ে দেন। পরদিন কলেজের সহপাঠীদের নিয়ে প্রতিবাদ মিছিলও বের করেন। মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়া তিন বন্ধুকে গ্রেপ্তারে বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। গ্রেফতার এড়াতে তিন মাসের জন্য আত্মগোপনে চলে যান তাঁরা। এরপর ৩ নভেম্বর জেলখানায় জাতীয় চার নেতা হত্যার পর আবার প্রকাশ্যে এসে আবারও প্রতিবাদ করেন।
১৯৭৫ সালের ৬ নভেম্বর পুলিশের হাতে আটক হন তিন বন্ধু। স্বজনদের সামনে পওে থানায় নিয়ে নির্মম নির্যাতন করা হয় তাঁদের। পরদিন নেওয়া হয় নাটোর জেলা কারাগারে। সেখানে ১৫ দিন রাখার পর পাঠানো হয় রাজশাহী কারাগারে। তিন মাস পর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য অশোক পালকে অর্ন্তবর্তীকালীন জামিন দেন আদালত। কিন্তু পরীক্ষার দিন কেন্দ্র থেকেই তাঁকে আবার আটক করে পুলিশ। জামিন না পাওয়ায় পরীক্ষা দিতে পারেননি প্রবীর বর্মন ও নির্মল কর্মকার।
প্রবীর বর্মন ও নির্মল কর্মকার বলেন, রাজশাহী জেলখানায় বিচারবহির্ভূতভাবে দুই বছর আটকে রাখা হয় তাঁদের। দুই বছরের মাথায় রাজশাহী জেলা জজ আদালতে ছয় মাসের সশ্রম কারাদ- হয় তাঁদের। একই সঙ্গে ২০০ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে দুই মাসের জেল দেওয়া হয়। জমি-গরু বিক্রি করে জরিমানার টাকা পরিশোধ করেছিলেন তাদের পরিবার।
গত ১৩ আগষ্ট শুক্রবার গুরুদাসপুরে বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদকারী তিন বন্ধুর রাষ্ট্রিয় স্বিকৃতী মেলেনি শিরোনামে গুরুদাসপুর বার্ায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।

Facebook Comments Box
SHARE NOW

বাংলাদেশ সময়: ৮:৩৬ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৫ আগস্ট ২০২২

gurudaspurbarta.com |

advertisement

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement

আক

শনিরবিসোমমঙ্গলবুধবৃহশুক্র
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১ 
advertisement

প্রকাশক : মোঃ ফারুক হোসেন ০১৭১১০৫৫৪৩১

সম্পাদক : অধ্যাপক মোঃ সাজেদুর রহমান সাজ্জাদ ০১৭১৯৭৯৩০০৩

আইন উপদেষ্টা : এডভোকেট এস এম শহিদুল ইসলাম সোহেল, সুপ্রিমকোর্ট ঢাকা

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়, মুন টেলিকম, চাঁচকৈড় বাজার, গুরুদাসপুর, নাটোর-৬৪৪০। 01711055431, gurudaspurbarta@gmail.com, gurudaspurbarta@hotmail.com