নাটোরের গুরুদাসপুরের এম হক ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক খাইরুন নাহারের গলায় ফাঁস দিয়ে রহস্যাবৃত আত্মহত্যার আটক স্বামী কলেজ ছাত্র মামুন হোসেনকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন নাটোরের পুলিশ সুপার (এসপি) লিটন কুমার সাহা। সোমবার (১৫আগষ্ট)দুপুর ১টার দিকে তাকে আদালতে নেয়া হয়।
পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, ‘ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় মামুনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্তধীন থাকায় তাকে সন্দেহজনকভাবে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’
সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাসিম আহম্মেদ বলেন, ‘মামুন হোসেনকে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. মোসলেম উদ্দীনের আদালতে তোলা হলে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।
ময়নাতদন্ত শেষে চিকিৎসক (আরএমও) শামিউল ইসলাম শান্ত জানিয়েছিলেন,শিক্ষক খায়রুন নাহারের মরদেহে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। শ্বাসরোধ হওয়ার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। এরপরও ভিসেরা রিপোর্ট পেলে আরও বিস্তারিত জানা যাবে।
নাটোর সদর হাসপাতালে সহকারী পরিচালক পরিতোষ কুমার জানান, আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা শামিউল ইসলাম শান্তকে প্রধান করে তিন সদস্যের টিম গঠন করা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যার পর খাইরুন নাহারের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিবেদন হাতে পেলে তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
খাইরুনের মরদেহ উদ্ধারর ঘটনায় তার চাচাতো ভাই সাবের উদ্দিন রবিবার রাতে থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেন। ময়না তদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হলে রাত ৮টার দিকে গুরুদাসপুর উপজেলার স্থানীয় আবু বকর সিদ্দিকী কওমী মাদ্রাসা মাঠে জানাযা শেষে খামার নাচকৈড় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
উল্লেখ্য-দুই সন্তানের জননী খায়রুন নাহার আগের স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর মামুনকে বিয়ে করেন। বিয়ের ৬ মাস পর গত জুলাই মাসে বেশকিছু সংবাদ মাধ্যমের ঘটনাটি প্রকাশ পেলে আলোচিত-সমালোচিত হন তিনি। ১৪ আগষ্ট রোববার সকাল ৭টার দিকে শহরের বলারিপাড়া এলাকার ভাড়া বাসা থেকে কলেজশিক্ষিকা খাইরুন নাহারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার পরপরই তার স্বামী মামুন হোসেনকে হেফাজতে নেয় পুলিশ।
খায়রুন নাহার গুরুদাসপুর পৌরসদরের খামারনাচকৈড় মহল্লার মো.খয়ের উদ্দিনের মেয়ে। বর্তমান স্বামী মামুন হোসেন উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাটপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে ও নাটোর এন এস সরকারি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
৪২ বছর বয়সী খাইরুন নাহার গুরুদাসপুরের খুবজিপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক। ২২ বছরের মামুনের বাড়ি উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাটপাড়া গ্রামে। তিনি নাটোর এন এস সরকারি কলেজের ডিগ্রী দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিয়েবিচ্ছেদের পর একমাত্র ছেলেকে নিয়ে নিজ বাড়িতেই থাকতেন খায়রুন। ফেসবুকের মেসেঞ্জারে ২০২১ সালের ২৪ জুন মামুনের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। পরিচয়ের ছয় মাস পর গত বছরের ১২ ডিসেম্বর কাজি অফিসে গিয়ে বিয়ে করেন তারা।
বিয়ের ছয় মাস পর জুলাইয়ে ঘটনাটি জানাজানি হয়। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তাদের বিয়ের খবর ফলাও করে প্রচার করা হয়; সম্প্রচার করা হয় ভিডিও সাক্ষাৎকারও। এতে ‘টক অফ দ্য কান্ট্রি’তে পরিণত হয় বিষয়টি।
বাংলাদেশ সময়: ৮:৫০ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৫ আগস্ট ২০২২
gurudaspurbarta.com | MD. Faruk Hossain