দীর্ঘ ৮ বছর পর নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন আগামী ১৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এ সম্মেলন ও কমিটি গঠনকে ঘিরে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উৎসবের আমেজ। সম্মেলনস্থল গুরুদাসপুর সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ সেজেছে নতুন সাজে।
দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদেও সাথে কথা বলে জানা গেছে,গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের দুর্গ হিসাবে পরিচিত। জাতীয় সংসদসহ যে কোন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করতে দলীয় নেতা-কর্মীদের বিশেষ ভুমিকা থাকে। তৃণমূলের নেতৃত্বকে শক্তিশালী করতে সম্মেলনের মাধ্যমে জনপ্রিয়,ত্যাগী ও কর্মীবান্ধব নেতৃত্ব চায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। তৃণমূলের সাথে যাদের যোগাযোগ রয়েছে তাদেরই নেতৃত্বে আসা উচিত বলে মনে করছেন নেতা-কর্মিরা।
ইতোমধ্যে পদপ্রত্যাশী নেতারা সম্মেলন সফল করার আহবান জানিয়ে উপজেলা ও সভাস্থলের চারপাশে ফেস্টুন, ব্যানার, তোরণ ও বিলবোর্ড লাগিয়েছেন। মোটর সাইকেল শোভাযাত্রা করে প্রার্থীতার জানান দিচ্ছেন অনেকেই।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১৪ নভেম্বরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়। এ সম্মেলনে এ্যাড আনিসুর রহমান সভাপতি ও শাহ নেওয়াজ আলী মোল্লা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। দীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়ায় তারাই দায়িত্ব পালন করছেন। সম্মেলনকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও চলছে প্রচার প্রচারণা।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাড আনিসুর রহমান জানান,ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন উদ্বোধন করবেন নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম সম্পাদক ড.হাছান মাহমুদ। সম্মানিত অতিথি থাকবেন কেন্দ্রীয় কমিটি সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন । এছাড়াও কেন্দ্রীয় কমিটির ডা.রোকেয়া সুলতানা,নুরুল ইসলাম ঠান্ডু,বেগম আকতার জাহান,প্রফেসার মেরিনা জাহান উপস্থিত থাকবেন।
এদিকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে কারা আসছেন তা নিয়ে গুরুদাসপুর উপজেলার রাজনীতিক মহলে চলছে অনেক জল্পনা-কল্পনা। প্রার্থীতার বিষয়ে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির পক্ষ থেকে কোন তথ্য না জানালেও নেতা-কর্মিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সভাপতি পদপ্রার্থী বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও পৌর মেয়র শাহনেওয়াজ আলী মোল্লা, এ্যাড আনিসুর রহমান ও ধারাবারিষা ইউনিয়নের জনপ্রিয় সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদের নাম বেশী উচ্চারিত হচ্ছে।
অপরদিকে সম্পাদক পদে সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুসের পুত্র আসিফ আব্দুল্লাহ শোভন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় কৃষি ও সমবায় উপ কমিটির সদস্য আহমদ আলী মোল্লা, বিয়াঘাট ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক ও মশিন্দা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমানের নাম বেশী শোনা যাচ্ছে।
গুরুদাসপুর উপজেলার একাধিক ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মী জানিয়েছে,দীর্ঘ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন না হওয়ায় নেতাকর্মীরা অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছেন । তাছাড়া দলীয় কোন্দল,গ্রুপিং রাজনীতি ছিলো দলের জন্য অশনি সংকেত। তবে এ সম্মেলনের মাধ্যমে হাইব্রিডমুক্ত পরিক্ষিত ত্যাগী নেতাদের কেন্দ্র মূল্যায়ন করবে বলে তারা মনে করেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহনেওয়াজ আলী মোল্লা বলেন, দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও প্রতি তিনি আস্থাশীল। তারা যে সিদ্ধান্ত দেবেন, তা মেনে নেবো। দলে গুরুত্বপূর্ণ পদ না থাকলেও একজন সাধারন কর্মী হিসাবে জীবনের শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত কাজ করে যাবো।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান বলেন, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ তৃণমূলে কর্মীবান্ধব, অবস্থান ও জনপ্রিয়তাসম্পন্নদের হাতে নেতৃত্ব তুলে দেবে। ইলেকশান অথবা সিলেকশান দুই ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে তাদের। তবে সম্মেলন শান্তিপূর্ণ করতে সবাই ঐক্যবদ্ধ।
বাংলাদেশ সময়: ৫:৪০ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৪ নভেম্বর ২০২২
gurudaspurbarta.com | MD. Faruk Hossain