হাটের ময়লা আবর্জনার স্তুপের অভ্যন্তরে কাঁত হয়ে রয়েছে শহীদ স্মৃতি সৌধটি। পাশেই গণ শৌচাগার। সৌধটির গাঁয়ে সাঁটানো রয়েছে পোষ্টার। পেছনে চা স্টল সামনে রেন্ট এ কার গাড়ি পার্কিং। সন্ধ্যার পর মাদকসেবীদের আড্ডা আর যত্রতত্র জুঁতা-সেন্ডেল পায়ে বেদীতে উঠার দৃশ্য চোখে পরে। এক দশকেও পরিস্কার কিংবা শ্রদ্ধা জানানোর দৃশ্য চোখে পরেনি। কতৃপক্ষের উদাসিনতায় নানা অযত্ন অহহেলায় নাটোরের গুরুদাসপুর পৌরসদরের চাঁচকৈড় বাজারে অবস্থিত শহীদ স্মৃতি সৌধটি।
সোমবার(১২ ডিসেম্বর) দুপুরে চাঁচকৈড় বাজারের অন্তত ১০ জন ব্যবসায়ী ও সুধীজনের সাথে কথা বলে জানাগেছে,২০০৬ সালের মার্চ মাসে তৎকালীন পৌর মেয়র মশিউর রহমান বাবলু স্মৃতি সৌধটি স্থাপন করেন। শুরুতে বাজারের ব্যবসায়ীরা স্মৃতি সৌধটিতে শ্রদ্ধা জানালেও বর্তমানে শ্রদ্ধা জানানো হয়না।
স্মৃতিসৌধের আশেপাশে হাট-বাজারের বর্জ্র ফেলা হচ্ছে। গাছের পাতা পড়ে নোংরা হয়ে আছে। পাশেই রয়েছে গনসৌচাগার,একাধিক চা স্টল। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে মিনারের চর্তুপাশে শিকল সেঁটে দেয়া থাকলেও বর্তমান প্রাচীরবিহীন অরক্ষিত সৌধটি। অরক্ষিত বলে মাদকসেবীদের বেদীতে মাদক গ্রহনের চিত্র অনেকে মর্মাহত করে। বেদীতে বসে চা’পান আর খোশগল্প নিত্য নৈমত্তিক ঘটনা। চরম অযত্ন ও অবহেলায় নিদর্শন স্মৃতি সৌধটি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিক শাহজাহান আলী বলেন, ‘রসুন হাটার শহীদ মিনারের বাজে অবস্থার জন্য পৌরসভা কর্তৃপক্ষ দায়ী। ভুল করেও কর্তৃপক্ষ খোঁজ নেন না। বছরের বিশেষ দিনগুলোতে পরিস্কার করাও হয়না। হয় ওই শহীদ মিনার সংস্কার কিংবা অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হোক নতুবা যথাযথ মর্যাদার ব্যবস্থা নেয়া হোক।
চাঁচকৈড় নাজিম উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ(ভারপ্রাপ্ত)কবি,সাহিত্যিক,গবেষক জালাল উদ্দিন শুক্তি জানান, স্মৃতি সৌধের সাথে আমাদের আবেক অনুভুতি জড়িত। চাঁচকৈড় বাজারের শহীদ মিনারের অযত্ন অবহেলা আমাদের কষ্ট দেয়। কর্তৃপক্ষকে এর মর্যাদা রক্ষার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি আরও জানান,চাঁচকৈড় বাজারে বেশ ক’টি ব্যবসায়ী সংগঠন রয়েছে। তার বছরের বিশেষ দিনগুলিতে ফুল দিয়ে শহীদ মিনারের মর্যাদা রক্ষা করতে পারেন।
সংশ্লিষ্ট ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রাশিদুল ইসলাম জানান, পৌর মেয়র একই ওয়ার্ডে বসবাস করেন। বিধায় তিনিই বিষয়টি দেখভাল করেন। এখনই পরিস্কারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আর মেয়রের সাথে পরামর্শ করে দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হবে।
পৌর মেয়র শাহনেওয়াজ আলী জানান,রসুন হাটার শহীদ স্মৃতি সৌধটি হাটের মধ্যস্থলে হওয়ার কারনে সব সময় পরিস্কার পরিছন্ন রাখা কঠিন। স্মৃতি সৌধটির জীর্ন অবস্থা আমাদের কষ্ট দেয়। সবার সাথে পরামর্শক্রমে রসুন হাটার স্মৃতি সৌধটির মর্যাদা রক্ষা কিংবা অপসারন দুটির একটি করার চিন্তা ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ৯:১১ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২২
gurudaspurbarta.com | MD. Faruk Hossain