উজানের ধেয়ে আসা পানি আর ক’দিনের বর্ষনে নাটোরের গুরুদাসপুর দিয়ে প্রবাহিত আত্রাই ও নন্দকুজা নদীর পানি আশঙ্কা জনক হারে বাড়ছে। এ পানি চলনবিলে প্রবেশ করায় সেখানেও প্রতিদিনই পানি বেড়ে প্লাবিত নতুন নতুন এলাকা। এতে চলনবিলের মানুষের পারাপার ও মাছ ধরার প্রধান মাধ্যম ডিঙি নৌকা তৈরী ও কেনা বেচায় ধুম পরেছে।
শনিবার (১৮ জুন) সকালে সরেজমিনে চলনবিলাঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ চাঁচকৈড় নৌকার হাট ঘুরে দেখা গেছে,বর্ষাকে ঘিরে নৌকা তৈরির কারিগররা ব্যস্তসময় পার করছেন। হাটের দক্ষিনাংশে ২৫-৩০টি কারখানায় চলছে ডিঙি নৌকা তৈরীর কাজ। কারখানার সামনে একটির পর একটি উঠিয়ে বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে।
সপ্তাহের দুদিন শনি ও মঙ্গলবারে এ হাটে বিক্রি হয় শত শত নৌকা। নৌকা কেনা বেচায় নিয়োজিত ব্যবসায়ী,মিস্ত্রি ও ক্রেতার হাকডাকে মুখরিত নৌকা হাটি। নৌকা ক্রয়ে সুফল পাচ্ছেন পানিবন্দি মানুষ। বর্ষা মৌসুমে কর্মহীন কৃষক ও জেলেদের মাছ ধরার প্রধান উপকরন এ নৌকা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন অনেক কাঠমিস্ত্রি।অন্যদিকে মহাজনরা আগে থেকে প্রয়োজনীয় কাঠ সংগ্রহ করে বর্ষাকে ঘিরে অপেক্ষায় থাকে নৌকা বিক্রির পসড়া সাজিয়ে।
পার্শ্ববর্তী তাড়াশ উপজেলার কুন্দইল গ্রামের আনোয়ার হোসেন,নাদো সৈয়দপুর গ্রামের শরিফুল ইসলাম বলেন, তারা বিলপাড়ের কৃষক মানুষ। বর্ষা মৌসুমে তাদের হাতে কাজ থাকে না। আবার এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়ত করতে হয় নৌকায়। মাছ ধরে বাড়তি আয় ও পারাপারের জন্যই তারা ডিঙি নৌকা কিনতে এসেছেন। তবে গত বছরে তুলনায় এবার নৌকার দাম বেশি।
চাঁচকৈড় হাটের ডিঙি নৌকা তৈরির কারিগর মইনুল মৃধা, রবিউল ও আলাউদ্দিন বলেন,বর্ষা মৌসুমে ডিঙ্গি নৌকার কদর থাকায় নৌকা তৈরী করে চলে তাদের সংসার। কাঠের প্রকারভেদে নৌকার দাম কম-বেশি হয়ে থাকে বলে জানান তারা। ১২-১৫ হাত নৌকা তৈরিতে খরচ হয় সাড়ে ৩ হাজার টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা। ১০-১২ হাত নৌকা তৈরি করতে খরচ হয় ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা। প্রতিটি নৌকা ৫০০ টাকা লাভে তারা বিক্রি করছেন।
ব্যবসায়ী শিবলু ফকির জানান,এবছর বন্যার প্রাদুর্ভাব বেশি। দেশের বিভিন্নস্থানের মতো চলনবিলেও আগাম পানি ঢুকেছে। এতে নৌকার চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুন। গত বছরের তুলনায় শ্রমিক,কাঠ ও নৌকা তৈরীর প্লেনশীটের দাম বেশি। এ কারনে নৌকাও বাড়তি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
বাংলাদেশ সময়: ৪:৩৮ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১৮ জুন ২০২২
gurudaspurbarta.com | MD. Faruk Hossain